ঢাকা, ৫ মে ২০২৫ —
বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন, যা দেশের গণমাধ্যম অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যে সকল গণমাধ্যমকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর অনুমোদন প্রক্রিয়া শিগগিরই তদন্তের আওতায় আনা হবে।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, *“আওয়ামী লীগের আমলে যে গণমাধ্যমগুলোর লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, আমরা খুব শিগগিরই সেগুলোর তদন্ত করব। কখন, কিভাবে এদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং এই অনুমোদনের ভিত্তিতে এরা বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, ভুয়া সাংবাদিক তৈরি করেছে, সেটি তদন্ত করে দেখা হবে।”*
এই বক্তব্যের মাধ্যমে সরকার স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছে যে, গণমাধ্যম স্বাধীনতার নামে যেন কেউ অপপ্রচার বা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত না হয়। অতীতে কিছু গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবর প্রকাশ ও তথ্য বিকৃতির অভিযোগ উঠেছিল, যা বর্তমান প্রশাসনের নজরে এসেছে।
**গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বনাম দায়বদ্ধতা**
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার। তবে সেটি যেন দায়িত্বহীনতায় রূপ না নেয়, সেদিকেও রাষ্ট্রের দৃষ্টি রাখা জরুরি। ভুয়া সাংবাদিকতার অভিযোগ, মিথ্যা খবর ছড়ানো, বা দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তা গণমাধ্যমের ভাবমূর্তিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তথ্য উপদেষ্টার এই ঘোষণা সেই দায়বদ্ধতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিতে এক ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এই তদন্তের ফলে প্রকৃত সাংবাদিকরা যেমন স্বীকৃতি পাবেন, তেমনি ভুয়া পরিচয়ে যারা পেশায় এসেছে, তাদের চিহ্নিত করে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।
**রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা**
এই মুহূর্তে দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ বেশ সংবেদনশীল। পরিবর্তিত প্রশাসন চাইছে পুরনো অনেক সিদ্ধান্তের নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করতে। এ লক্ষ্যে গণমাধ্যমের লাইসেন্স সংক্রান্ত তদন্ত একটি বড় উদ্যোগ। তবে এই উদ্যোগ যেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ না হয়, সেদিকেও প্রশাসনের সচেতনতা থাকা প্রয়োজন।
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও পেশাগত মানদণ্ডে এই তদন্ত পরিচালিত হলে দেশের গণমাধ্যম আরও শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে—এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।